পার্সটুডে - ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন "হামাস" গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে।
ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা গেছে, মিশরীয় ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নতুন শর্তের একটি তালিকা হামাসের কাছে তুলে ধরেছে যাতে আলোচনার নতুন পর্যায় এগিয়ে নেওয়া যায়। এই শর্তগুলোর মধ্যে বন্দীদের সংখ্যা, তাদের পরিচয় এবং তাদের মুক্তি দেয়ার সময়সীমার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তবে এইসব শর্তের সবচেয়ে বিপজ্জনক অংশটি হল তাতে বলা হয়েছে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হলে হামাসকে প্রথমে তাদের অস্ত্র সমর্পন করতে হবে। ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, হামাস আন্দোলনের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বাসেম নাইম বুধবার বলেছেন যে, এই আন্দোলন একক আলোচনার মাধ্যমে একটি ব্যাপক চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত। একটি চুক্তি যার মধ্যে রয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, ক্রসিং পয়েন্ট খুলে দেওয়া এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করা। নাইম আরও বলেন: "এই চুক্তি বাস্তবায়নে প্রধা বাধা হল নেতানিয়াহু এবং তার চরমপন্থী মন্ত্রিসভা, যারা মানবিক ও আঞ্চলিক স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেয়।"
ফিলিস্তিনি বন্দী দিবসে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক নীরবতার নিন্দা
এই প্রসঙ্গে, হামাস ১৭ এপ্রিল, ফিলিস্তিনি বন্দী দিবস উপলক্ষে একটি বিবৃতি জারি করেছে। বিবৃতির একটি অংশে লেখা আছে: "ফিলিস্তিনি বন্দী দিবস উপলক্ষে, শত্রুর কারাগার থেকে বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি আমাদের "স্টর্ম অফ ফ্রিডম" চুক্তিতে সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাচ্ছে এবং আমরা তাদের সকলের মুক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকা থেকে অপহৃত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি এবং দখলদার সরকারের কারাগারে বন্দী সকল ফিলিস্তিনি বন্দীর জীবন ও স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী করি ইসরাইলকে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও পূর্বপরিকল্পিত হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতার নিন্দা জানাই।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তাঁবুতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৩ জনে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছেন কয়েক ডজন। গাজার বিভিন্ন এলাকায় তিনটি পৃথক হামলায় ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তাঁবু লক্ষ্য করে ইসরাইলি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে কয়েক ডজন শহীদ ও আহত হয়েছে। চিকিৎসা সূত্র ঘোষণা করেছে যে উত্তর গাজার জাবালিয়া শিবিরে একটি শরণার্থী তাঁবুতে ড্রোন হামলায় ৭ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া শহরে, একটি শরণার্থী তাঁবু লক্ষ্য করে একই ধরণের হামলায় একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের ছয় সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়াও, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের মাওয়াসি এলাকায়, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৫ জনেরও বেশি শহীদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুতে এই সরাসরি আক্রমণের ফলে আগুন লেগে যায় এবং আগুনে পুড়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে দেইর আল-বালাহের পশ্চিমে ফিলিস্তিনিদের একটি সমাবেশকে লক্ষ্য করে আরেকটি হামলায় একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
আল-কাস্সাম ব্রিগেড পূর্ব গাজায় ৩টি ইসরাইলি মেরকাভা ট্যাঙ্কে হামলা চালিয়েছে
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড পূর্ব গাজায় তিনটি ইসরাইলি মেরকাভা ট্যাঙ্ক লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে। বুধবার বার্তাসংস্থা ইসনা জানিয়েছে, আল-কাসসাম ব্রিগেড ঘোষণা করেছে যে তাদের যোদ্ধারা পূর্ব গাজা শহরের আল-তুফাহ পাড়ার পূর্বে আল-ওয়াফা হাসপাতালের কাছে তিনটি ইসরাইলি মেরকাভা ৪ ট্যাঙ্ককে ইয়াসিন ১০৫ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
আল-আকসা মসজিদে বারবার ইসরাইলি হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে হামাস এবং ইসলামি জিহাদ
ইতিমধ্যে, হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ আন্দোলন, আল-আকসা মসজিদে বারবার ইসরাইলি হামলার বিষয়ে সতর্ক করে, এই পদক্ষেপকে মুসলিম জাতির পবিত্রতার প্রতি অবমাননা বলে উল্লেখ করেছে। একইসাথে তারা ইহুদিকরণের হুমকির বিরুদ্ধে এই মসজিদটিকে রক্ষা করার জন্য আরব ও মুসলিম দেশগুলোকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।#
342/
Your Comment